শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
আপনার বাচ্চার মধ্যে নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ গুলো কি দেখা যাচ্ছে ? আপনি সেটি বুঝতে পারছেন না ? তাহলে আসুন আপনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার।
জ্বর কাশি [কফযুক্ত বা শুকনো] কষ্টকর শ্বাস নেওয়া খাবার কম খাওয়া এবং শরীর অনেক ক্লান্ত হওয়া এবং অনেক অস্থিরতা দেখানো এই সবগুলো শিশু নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ। প্রতিকার কিভাবে করবেন তা আমার এই পোস্ট পড়ে বুঝতে পারবেন। শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার কিভাবে করা যায় তা জেনে নিন এবং বুঝুন খুব সহজে।
পেজ সূচিপত্রঃশিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- শিশুদের নিউমোনিয়া হয় কেনো
- নিউমোনিয়া রোগ নির্ণয়
- নিউমোনিয়া রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা
- শেষ কথাঃশিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার নিউমোনিয়া রোগ হলে শিশুর
জ্বর,কাশি,দ্রুত শ্বাস নেওয়া,শ্বাসকষ্ট হওয়া এবং বুক বসে যাওয়া। নিউমোনিয়া
হলে শিশুরা খাবার কম খায়। নিউমোনিয়া হলে শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ শোনা যায়।
বমি বা পাতলা পায়খানা হয়। ঠোঁট বা নখ নীলচে হয়ে যায়। আর ঠোঁট বা নখ নীলচে
হয়ে গেলে বুঝবেন শরীরে অক্সিজেন এর মাত্রা কম হয়ে গেছে এতে যত দ্রুত সম্ভব
হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এটি খুব জরুরী লক্ষণ। এই লক্ষণ গুলো থেকেও যেগুলো
লক্ষণ আরো বিপদজনক সেগুলো হলো
- দ্রুত বা কষ্ট করে শ্বাস নেওয়া
- শিশুর বুক খুব বেশি ডুবে যাওয়া
- জ্ঞান হারানো বা খিচুনি ওঠা
- কিছু খেতে না চাওয়া
- ঠোঁট মুখ নীল হয়ে যাওয়া
উপরের এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে খুব দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। না
হলে আপনার সন্তানকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে। তাই উপরের লক্ষণ গুলো
দেখা দিলে খুব দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে খুব
দ্রুত।
শিশুদের নিউমোনিয়া হয় কেনো
নিউমোনিয়া ফুসফুসের সংক্রমণ রোগ। আমরা ফুসফুসের মাধ্যমে অক্সিজেন নিয়ে থাকি
এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাহির করে দেই। শিশুদের ফুসফুসে কোন ধরনের ইনফেকশন হলে
সেটি থেকে সাধারণত নিউমোনিয়া সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমাদের দেশে প্রতিবছর,পাঁচ
বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে ২৪ শতাংশ শিশুর মৃত্যু হয় নিউমোনিয়া রোগের
কারণে।
আরো পড়ুন:
তাই আমাদের বাচ্চাদের/শিশুদের খুব সাবধানতার সাথে রাখতে হবে পাঁচ বছর বয়স
পর্যন্ত। নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
এবং খুব দ্রুত ভালো মানের চিকিৎসা দিতে হবে। তাহলেই আপনার বাচ্চা/শিশু খুব
দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। নিউমোনিয়া রোগ বাচ্চাদের/শিশুদের জন্য অনেক কষ্টসাধ্য
একটি রোগ। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা দিতে হবে।
নিউমোনিয়া রোগ নির্ণয়
আপনার বাচ্চা/শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে কিনা তা যাচাই করার জন্য ডাক্তার শরীরের
বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করে থাকে। এর মধ্যে সাধারণ গুলো হল
- শিশুর শ্বাস এর গতি ঠিক আছে কিনা
- বুক বেশি দেবে যাচ্ছে কিনা
- জ্বর,কাশি ও শরীর দুর্বল আছে কিনা
প্রাথমিক অবস্থায় এসব কিছু নির্ণয় করে। এরপর যদি মনে হয় সবগুলো লক্ষণ রয়েছে
তাহলে নিচের দেওয়া পরীক্ষা গুলো করে থাকেন ডাক্তারগন
- রক্ত পরীক্ষা
- বুকের এক্সরে
- অক্সিজেন লেভেল
আরো পড়ুন:
ডাক্তারগন রক্তের পরীক্ষা করে থাকে ফুসফুসে বা শরীরের কোন ভাইরাস আছে কিনা তা
দেখার জন্য। যদি কোন ভাইরাস থাকে রক্তের মধ্যে তাহলে সেটি নিউমোনিয়ার
লক্ষণ। বুকের এক্সরে করলে দেখা যায় যে ফুসফুসের আশেপাশে সাদা হয়ে আছে
কিনা। যদি সাদা হয়ে থাকে তাহলে এটি নিউমোনিয়া লক্ষণ। অক্সিজেন লেভেল টেস্ট
করার পর যদি অক্সিজেন লেভেল 90% এর নিচে হয়ে যায় তাহলে সেটি নিউমোনিয়ার
লক্ষণ। যদি সবগুলো লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে ডাক্তার আপনার বাচ্চা/শিশু কে সঠিক
চিকিৎসা দিয়ে থাকবে। এতে করে আপনার বাচ্চা/শিশু খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
নিউমোনিয়া রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা
আপনি আমার পোস্টটি পড়ার পরে যদি নিউমোনিয়া রোগের সকল লক্ষণগুলো দেখতে
পান তাহলে প্রাথমিকভাবে যে যে চিকিৎসা গুলো দিবেন।
- শিশুকে ঠান্ডা লাগতে দিবেন না
- জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়াবেন
শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল এর মাত্রা ব্যবহার করে খাওয়াবেন।
- নাক বন্ধ থাকলে পরিষ্কার করে দিতে হবে
- মায়ের দুধ বা তরল খাবার বেশি খাওয়াবেন
- ধোঁয়া থেকে দূরে রাখবেন
আরো পড়ুন:
রান্নাঘরের ধোঁয়া বা সিগারেটের ধোঁয়া এসবের ধোঁয়া বাচ্চা বা শিশুর নাকে গেলে
শিশুর শ্বাস নিতে অনেক বেশি কষ্ট হয়ে থাকে। এতে করে শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
তাই বাচ্চার আশেপাশে রান্না করবেন না বা সিগারেটের ধোঁয়া আসতে দিবেন না।
- বারবার শ্বাসের গতি ঠিক আছে কিনা দেখে নিবেন
- শিশুকে সোজা বা আধা বসা অবস্থায় রাখবেন
শিশুকে সোজা বা আধা বসা অবস্থায় রাখলে এতে শিশুর/বাচ্চার নিঃশ্বাস নিতে
সুবিধা হয়। এতে বাচ্চা/শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অনেকটা সুবিধা হয়। এবং
কষ্ট কম হয়। তাই বাচ্চাকে সোজা বা আধা বসা অবস্থায় রাখবেন।
শেষ কথাঃশিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার বাংলাদেশের প্রতিবছর প্রায় 24 শতাংশ
বাচ্চা নিউমোনিয়া রোগে মারা যায়। এর মধ্যে সবথেকে বেশি মারা যায় পাঁচ বছরের
কম বয়সের বাচ্চা। সাধারণত বেশি ঠান্ডা লাগার কারণে ফুসফুসে ইনফেকশন হয়ে
নিউমোনিয়া হয়ে থাকে।তাই আপনার বাচ্চাকে ঠান্ডা লাগানো থেকে বিরত রাখুন।
এক থেকে চার বছরের বাচ্চাগুলো সাধারণত বেশি পানি নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। আর
পানি থেকে বেশি ঠান্ডা লাগে। তাই পানি নিয়ে খেলা থেকে বিরত রাখুন। এক মাস থেকে
পাঁচ মাসের বাচ্চাদের একটু সাবধানতার সাথে রাখতে হবে। বাহিরে নিয়ে যাবেন না
বেশি। যদি শীতের সময় হয়। তাহলে শীতের সকালের মিষ্টি রোদে ১৫ থেকে ২০ মিনিট
পুরো খালি গায়ে রাখবেন। এতে করে বাচ্চার শরীর গরম থাকবে এবং সূর্যের আলো থেকে
বাচ্চা ভিটামিন সি তার শরীরে নিতে পারবে।

মাল্টি টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url